বাংলাদেশের মাছের ঝোলের স্বাদ ভুলতে পারেন না ওয়াসিম

পাকিস্তানকে ১৯৯২ বিশ্বকাপ জিতিয়ে তখন বিশ্ব ক্রিকেটের বড় নাম ওয়াসিম আকরাম। বিশ্বের অন্যতম সেরা এই পেসার ১৯৯৫ সালে ফর্মের তুঙ্গে থাকা অবস্থাতেই আবাহনীর হয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ খেলতে এসেছিলেন বাংলাদেশে। তখন বাংলাদেশে ক্রিকেট উন্মাদনা দেখে চমকে যান ওয়াসিম। এখানকার মানুষ আর খাবারেরও প্রেমে পড়ে যান তিনি। বিশেষ করে বাঙালির হাতের মাছের ঝোলের স্বাদ নাকি এখনো দোলা দেয় তাকে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশের ওয়ানডে  তামিম ইকবালের নিয়মিত সরাসরি অনলাইন আড্ডায় বিশেষ অতিথি হিসেবে এসেছিলেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি পেসার। মূলত তামিমের আড্ডা চলছিল আকরাম খান, মিনহাজুল আবেদিন নান্নু আর খালেদ মাসুদ পাইলটকে নিয়ে।
এই তিনজনের সঙ্গেই আবাহনীতে একসঙ্গে খেলে গেছেন ওয়াসিম। বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলাতেও অনেকবার প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছেন এদের। তামিমের আড্ডায় তাই তাদের সুযোগ ঘটে স্মৃতি রোমন্থনের।
ওয়াসিমকে যুক্ত করে তামিম জানতে চান কি চিন্তায়  তখন বাংলাদেশে খেলতে এসেছিলেন তিনি,  ‘ওয়াসিম ভাই, আপনাকে আমি একটা জিনিস জিজ্ঞেস করতে চাই। ১৯৯৫ সালে আপনি বাংলাদেশে আবাহনীর হয়ে খেলতে এসেছিলেন। তখন তো আপনি সুপারস্টার। আপনি তখন কি ভেবে আবাহনীতে খেলতে এসেছিলেন?
ওয়াসিম জানান, মূলত আবাহনীর তখনকার সংগঠক আ হ ম মোস্তাফা কামালের পিড়াপিড়িতেই রাজী হয়ে যান তিনি। তবে মনের ভেতর আরেকটা উদ্দেশ ছিল বাংলাদেশকে জানা, এখানকার ক্রিকেটের অবস্থাটা বোঝা,  ‘প্রথমত আমি দেখতে চেয়েছিলাম বাংলাদেশের ক্রিকেটটা কতটা জনপ্রিয়। বিশ্বাস করবে কিনা, অর্থনীতিক লাভের ব্যাপারটা ছিল পরের বিষয়। আমার মনে আছে কামাল ভাই (বর্তমান অর্থমন্ত্রী মোস্তাফা কামাল) আমাকে হুট করেই আমন্ত্রণ করেন। উনি আমাকে চেপে ধরেন যে তোমাকে অবশ্যই মোহামেডানের বিপক্ষে আবাহনীর হয়ে খেলতে আসতে হবে। পাকিস্তানে কিন্তু এরকম তুমুল উন্মাদনায় ভরপুর ফুটবল, ক্রিকেট, হকির ক্লাব ছিল না তোমাদের দেশের মতো।’
ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে নেমেই টের পান বাংলাদেশের ক্রিকেট উন্মাদনা,  ‘আমার মনে আছে প্রথম ম্যাচে নেমেই দেখি গ্যালারি কানায় কানার ভরা। ক্রিকেট নিয়ে আগ্রহ দেখে চমকে যাই। অন্য যারা বাংলাদেশে খেলে গেছে তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশের ভরপুর গ্যালারির কথা শুনেছি। কিন্তু কখনো ভাবিনি বাংলাদেশের ক্রিকেটটা এতখানি জনপ্রিয়।’
এরপরে অনেকবার বাংলাদেশে এসেছেন ওয়াসিম। বাংলাদেশের মানুষ আর বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবার তাকে দিয়েছে ভিন্ন আমেজ,  ‘বাংলাদেশ আমার খুব কাছের। আমি দেশটা দেখতে চেয়েছিলাম। এই দেশের মানুষ, খাবারের প্রতি আকর্ষণ ছিল। আমি বাংলাদেশের মাছের ঝোল অনেক মিস করি।’

Post a Comment

0 Comments