ফাঁকা স্টেডিয়ামে শুরু বুন্দেসলিগার প্রথম দিনের ফলাফল


করোনভাইরাসের কারণে দীর্ঘ প্রায় দুই মাস লকডাউন থাকার পর প্রথম ইউরোপিয়ান লিগ হিসেবে শনিবার থেকে মাঠে গড়িয়েছে জার্মান বুন্দেসলিগা। প্রথম দিনের ম্যাচে নরওয়ের তরুণ প্রতিভা আর্লিন ব্রট হালান্ডের নৈপুণ্যে শালকেকে ৪-০ গোলে পরাজিত করেছে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। সিগন্যাল ইডুনা পার্কের ম্যাচটিতে অবশ্য স্বাগতিক সমর্থকদের উল্লাস বেশ মিস করেছে ডর্টমুন্ড। পুরো ম্যাচেই ১৯ বছর বয়সী হালান্ড নিজেকে দারুনভাবে প্রমাণ করেছে। করোনার পর পুনরায় জার্মান লিগ মাঠে গড়ানোর পর প্রথম গোলটি করেছেন এই নরওয়েজিয়ান।
পতুগিজ তারকা রাফায়েল গুয়েরেইরো দুই অর্ধে আরো দুটি গোল করেছেন । তার এই দুই গোলের মাঝে থ্রোগান হ্যাজার্ডের গোলে বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থাকা ডর্টমুন্ড। ম্যাচের ২৯ মিনিটে থ্রোগান হ্যাজার্ডের লো ক্রস থেকে প্রথম গোল করে হালান্ড স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন। সর্বশেষ ৯টি বুন্দেসলিগা ম্যাচে এটি হালান্ডের ১০ম গোল। এই নিয়ে এবারের মৌসুমে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় এটি তার ৪১তম গোল। জানুয়ারিতে রেড বুল সালজবার্গ থেকে যোগ দেবার পর ডর্টমুন্ডের হয়ে ১২ ম্যাচে তিনি ১৩টি গোল করেছেন।
গোল করার পর সামাজিক দূরত্বের বিধিনিষেধ মেনে তিনি একাই উদযাপন করেছেন। এ সময় তিনি সতীর্থদের কাছাকাছি আসেননি। লিগ শুরু হবার আগেই কঠোর গাইডলাইন মেনেই ম্যাচগুলো আয়োজনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। সিগন্যাল ইডুনা পার্কে দুই দল মিলিয়ে ৩০০ জনের বেশি মানুষের প্রবেশের অনুমতি ছিল না। অথচ স্বাভাবিক সময় যেখানে ৮২ হাজার সমর্থকের ভিড় থাকে। বিরতির ঠিক আগে শালকে গোলকিপার মার্কাস শুবার্টের ভুলে দলের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেন গুয়েরেইরো। ৪৮ মিনিটে জুলিয়ান ব্রান্ডেটের সহায়তায় দলের হয়ে তৃতীয় গোলটি করেন হ্যাজার্ড। ৬৩ মিনিটে গুয়েরেইরোর দ্বিতীয় গোলের যোগানদাতা ছিলেন হালান্ড।
ম্যাচে শালকের ম্যাচ ফিটনেসের অভাব চোখে পড়েছে। বিপরীতে ডর্টমুন্ডকে দেখে মনেই হয়নি দীর্ঘ বিরতির পর তারা মাঠে নেমেছে।দিনের অপর ম্যাচে তৃতীয় স্থানে থাকা আরবি লিপজিগ হোম ম্যাচে ফ্রেইবার্গের সাথে ১-১ গোলে ড্র করেছে। ডিফেন্ডার ম্যানুয়েল গুল্ডে ফ্রেইবার্গকে ৩৪ মিনিটে এগিয়ে দেন। এই গোলের পর তিনি কনুই স্পর্শ করে সতীর্থদের সাথে তা উদযাপন করেন। ৭৭ মিনিটে স্ট্রাইকার ইউসুফ পোলসেনের গোলে লিপজিগ ম্যাচে সমতা ফেরান। ফ্রেইবার্গ স্টপেজ টাইমে গোল পেলেও ভিএআর প্রযুক্তিতে অফসাইডের কারণে তা বাতিল হয়ে যায়।
সরকারের সবুজ সঙ্কেত পাবার পর জার্মান ফুটবল লিগ (ডিএফএল) খেলোয়াড় ও কোচদের নিয়মিত ভাইরাস পরীক্ষা করেছে। দলগুলোকে গত কয়েক সপ্তাহ কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছিল। খেলোয়াড় ও স্টাফদের কঠোর গাইডলাইন মেনেই মাঠে নামতে হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজার রাখার লক্ষ্যে পুরো দলকে বেশ কয়েকটি বাসে চেপে মাঠে আসতে হয়েছে। যদিও করোনাভাইরাসে ইউরোপের অন্যান্য জায়গার তুলনায় জার্মানীতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কম।
ডিএফএল জানিয়েছে লকডাউনের কারণে ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকিট ক্লাব চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়েছে। এ ব্যাপারে জার্মান ফুটবল লিগ কোন ধরনের গোপনীয়তা রাখেনি। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে লিগের বাকি থাকা ৯ রাউন্ডের ম্যাচ যদি শেষ করা যায় তবে ক্লাবগুলো অন্তত টেলিভিশন চুক্তি বাবদ প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ইউরো পেতে পারে। ইংল্যান্ড, স্পেন ও ইতালিতে এখনো লিগ মাঠে ফেরার অপেক্ষায় আছে। তারা এই বুন্দেসলিগাকে অনেকটাই এসিড টেস্ট হিসেবে বেছে নিয়েছে। অন্যান্য লিগ শুরু না হওয়ায় বুন্দেসলিগা বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি অতিরিক্ত টেলিভিশন সমর্থকের আশা করছে।

Post a Comment

0 Comments