সংকটে পড়া জুনিয়র অ্যাথলেট সামিউলের পাশে তামিম




চাকরি চলে গেছে। বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ফুটবলে খেপ খেলার সুযোগও নেই। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে আয়ের সব রকমের উৎস বন্ধ হয়ে গেছে সামিউল ইসলামের, যিনি গেল বছর জুনিয়র অ্যাথলেটিকসে হয়েছিলেন দেশের দ্রুততম মানব। এমন পরিস্থিতিতে ভীষণ আর্থিক সংকটে পড়া এই অ্যাথলেটের দুর্দশা দূর করতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তামিম ইকবাল। সামিউলের পরিবারের আগামী এক মাসের খরচ দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক।
তাদের দৈনিক খরচ ১৫০ টাকার মতো। কিন্তু সেটা যোগাড় করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছিল। সামিউলের হাতে কোনো কাজ না থাকায় সংসার চালানোর সমস্ত ভার পড়েছিল তার বাবার উপর, যিনি লিটারপ্রতি ৩ টাকা লাভে কৃষকদের কাছে ডিজেল বিক্রি করছিলেন। কিন্তু দৈনিক ৪০-৫০ লিটার ডিজেলও বিক্রি হচ্ছিল না। হৃদয়স্পর্শী প্রতিবেদনটি বাঁহাতি তারকা ক্রিকেটার তামিমের নজরে আসার পর তিনি ২০ বছর বয়সী তরুণের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন।
বুধবার খুলনা থেকে মুঠোফোনে সামিউল জানিয়েছেন, তামিম অর্থ সহায়তা করেছেন তাকে, ‘বিপদে বন্ধু খুঁজে পাওয়া দায় হলেও আমি আমার বিপদে তামিম ভাইকে পাশে পেয়েছি। আগামী এক মাস চলার জন্য আমাদের ছয় সদস্যের পরিবারের যে টাকা দরকার, তা তিনি দিয়েছেন।’
করোনাভাইরাসের ফলে সৃষ্ট অচলাবস্থার মাঝে দেশসেরা ওপেনার তামিমের এমন ভূমিকাকে বর্ণনা করার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন সামিউল, ‘আর্থিক সহায়তা পেয়ে আমরা স্বস্তি অনুভব করছি। আমি খুবই গর্বিত এটা ভেবে যে, বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক আরেকজন অ্যাথলেটের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন। আমি কথা বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।’
উল্লেখ্য, গেল অক্টোবরে সামিউল জুনিয়র অ্যাথলেটিকসে ১০০ মিটারে চ্যাম্পিয়ন হন ১১.৪১ সেকেন্ড সময় নিয়ে। এর আগ পর্যন্ত তিনি ফুটবলে খেপ খেলার জন্য পরিচিত ছিলেন স্থানীয় ক্রীড়াঙ্গনে। পাশাপাশি বিজেএমসির চুক্তিবদ্ধ অ্যাথলেট ছিলেন সামিউল। অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকরি করতেন খুলনার ক্রিসেন্ট জুট মিলে। কিন্তু বিজেএমসির লোকসানের কারণে গেল ডিসেম্বরে চাকরি হারাতে হয় তাকে। চাকরিতে থাকাকালে প্রতি সপ্তাহে ১ হাজার ৮৫০ টাকা পেতেন সামিউল। তা ছাড়া খেপের মৌসুমে ফুটবল খেলে মাসে ৭-৮ হাজার টাকাও আয় হতো তার। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে মহাবিপাকে পড়তে হয়েছিল তার পরিবারকে। তবে তামিম এগিয়ে আসায় অন্ধকারে যেন আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন তিনি।

Post a Comment

0 Comments