ব্যাডমিন্টন রাঙাচ্ছেন পাবনার মেয়েরা


একসময় ফরিদপুরকে বলা হতো হকির সূতিকাগার। তেমনি টেবিল টেনিসের উর্বর ভূমি হচ্ছে নড়াইল। ইদানীং ব্যাডমিন্টনে দাপট দেখাচ্ছেন পাবনার শাটলাররা।

এমনিতেই ব্যাডমিন্টনে পাবনার শাটলার ছিল অনেক আগে থেকেই। পাবনা থেকে উঠে এসে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন মনোয়ারুল আলম বাবুল, গোলাম আজিজ জিলানী। উঠে এসেছেন লালচাঁদ হোসেন, রানা বিশ্বাস ও আবদুল খালেক। আর নেপালে গত ডিসেম্বরে সর্বশেষ এসএ গেমসের জাতীয় দলের ছয়জন মেয়ের পাঁচজনই পাবনার। শুধু এলিনা সুলতানার বাড়ি খুলনা।

পাবনার এই দলে সবার আগে আছেন সাতবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন, বাংলাদেশ গেমসে একবারের চ্যাম্পিয়ন ও ছয়বাররে ত্রিমুকুজয়ী শাপলা আক্তার, জাতীয় প্রতিযোগিতায় দ্বৈতে ও মিশ্র দ্বৈতে চ্যাম্পিয়ন দুলালী হালদার, জুনিয়র চ্যাম্পিয়ন বৃষ্টি খাতুন, রেহানা খাতুন ও জুনিয়রে দ্বিমুকুটধারী র্ঊমি আক্তার। এ ছাড়া আছেন রেশমা আক্তার ও নাবিলা আক্তার।


পাবনার মহিলা সংগঠক হাওয়া বেগমের হাতে শাপলাসহ অন্যদের ব্যাডমিন্টনের হাতেখড়ি। তবে সবারই প্রাথমিক কোচ খোরশেদ আলম । শাপলা পাবনা থেকে ঢাকায় এসে বিমানে খেলেছেন। এরপর নিট কনসার্নে খেলেছেন। ওই সময় তাঁর স্বামী অহিদুজ্জামান রাজু ছিলেন কোচ। দুলালী হালদারের স্বামীও কোচ সোহেল রানা। বৃষ্টি ও রেহানা সেনাবাহিনীর অধীনে কোচিং করেন। তবে তাঁদের প্রাথমিক কোচ ছিলেন জাহিদুল হক।

র্ঊমি আক্তার অবশ্য খুলনার মেয়ে। কিন্তু খুলনা থেকে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ায় পাবনার হয়ে খেলছেন। কেন পাবনা অন্যদের চেয়ে এগিয়ে? প্রশ্নটা করতেই শাপলা বললেন, ‌‌‌‘পাবনা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সুযোগ ও সুবিধা অন্যদের চেয়ে বেশি। যে কারণে পাবনার ব্যাডমিন্টন আলাদা একটা জায়গা করে নিয়েছে।’

পাবনার ব্যাডমিন্টনে বড় অবদান ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত আরেফিন ফিরোজের। তিনি পাবনা জেলা ক্রীড়া সংস্থারও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তাঁকে স্মরণ করে কোচ অহিদুজ্জামান বলছিলেন, ‌‘ফিরোজ ভাই সম্ভাবনাময় শাটলার দেখলেই র‍্যাকেট দিতেন, সরঞ্জাম দিতেন। অন্য জেলার সঙ্গে খেলার সুযোগ করে দিতেন। পেশাদার শাটলার হওয়ার পথে সাহায্য করতেন। এটাই পাবনার ছেলে মেয়েদের জন্য বড় সহায়ক ভূমিকা হয়েছে।’

অবশ্য এই ক্রীড়া সংগঠক মারা যাওয়ার পর থেকে একটু হলেও থমকে গেছে পাবনার ক্রীড়াঙ্গন। তবে ঢাকার বাইরে পাবনাতে ২০১৮ সালে হয়েছিল জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ। সেবার পাবনার নতুন নতুন শাটলারদের মাঝে প্রচুর সাড়া মেলে।

শাপলা-রেহানাদের এখন একটাই চাওয়া, ঘরোয়া টুর্নামেন্টের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও লাল–সবুজের পতাকা ওড়াবেন।

Post a Comment

0 Comments