নেইমার-এমবাপ্পেকে ম্লান করে হরলান্ডের হাসি


এক দলে নেইমার এমবাপ্পে, আরেক দলে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ফর্মে থাকা স্ট্রাইকারদের একজন আর্লিং ব্রট হরলান্ড। দুই দলের লড়াইয়ের প্রথম ভাগে জয় হল হরলান্ডেরই 

অথচ এই ম্যাচে খেলারই কথা ছিল না হরলান্ডের
ই মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রথম রাউন্ডে খেলেছেন রেড বুল সালজবুর্গের হয়ে। পাঁচ ম্যাচে আট গোল করে নিজের জাত চিনিয়েছেন। সে ঝলক দেখেই এই জানুয়ারিতে ডর্টমুন্ড দলে এনেছে তাঁকে। এনে যে বিশেষ ভুল করেনি, সেটা হরলান্ড বুঝিয়ে দিচ্ছেন প্রতি মূহুর্তে। ডর্টমুন্ডের হয়ে এ পর্যন্ত ছয় ম্যাচে নয় গোল করা হরলান্ড পিএসজির রক্ষণভাগকেও নয়-ছয় করে দিয়েছেন গত রাতে। তাঁর জোড়া গোলেই নিজেদের মাঠে ২-১ গোলের জয় পেয়েছে হলুদ-কালো শিবির।
প্রথমার্ধে দুই দলই অতিরিক্ত সতর্ক খেলেছে, ফলাফল—গোল দিতে পারেনি কেউই। দ্বিতীয়ার্ধে ৬৯ থেকে ৭৭—এই আট মিনিটের মধ্যে জোড়া গোল করে হরলান্ড জানিয়ে দেন, কেন তাঁকে নিয়ে এত মাতামাতি হচ্ছে। ওদিকে হরলান্ডের দ্বিতীয় গোলের এক মিনিট আগে পিএসজিকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন নেইমার। সে এক গোলের কারণেই ম্যাচ হারলেও আশায় আছে ফরাসি ক্লাবটি। চ্যাম্পিয়নস লিগের নকআউট রাউন্ডগুলোয় পরের মাঠে গিয়ে করা একটা গোলের দাম যে অনেক বেশি!
ম্যাচ সেরার পুরষ্কারটাও উঠেছে হরলান্ডের হাতেই। কিন্তু সেরা খেলোয়াড়েরা যে সব সময় উন্নতি করে যেতে চান, সেটাই যেন আরেকবার সবাইকে মনে করিয়ে দিলেন হরলান্ড। ম্যাচ শেষে বলেছেন, আরও উন্নতি করতে হবে তাঁকে, ‘ম্যাচ সেরার পুরষ্কার পেয়ে আমি খুশি। তবে আমার মনে হচ্ছে আমি আরও অনেক ভালো খেলতে পারি। এই পর্যায়ে খেলতে হলে আপনাকে নিয়মিত উন্নতি করতে হবে।’ নেইমারের গোলটার কারণে ডর্টমুন্ডের কোয়ার্টারে ওঠাটা এখনও অনিশ্চিত, সেটাও জানেন হরলান্ড, ‘ম্যাচের ফলটা বেশ জয় জাগাচ্ছে। পিএসজি অনেক শক্তিশালী একটা দল। দ্বিতীয় লেগে ভালো করলে তারা পরের রাউন্ডে উঠে যেতে পারে।’

আগামী ১২ মার্চ শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে ডর্টমুন্ডকে নিজেদের মাঠে আতিথ্য দেবে পিএসজি। কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে হলে ডর্টমুন্ডকে হারাতেই হবে নেইমারদের।
এই লেগে কৌশলগত বেশ কিছু ভুল করেছেন পিএসজির কোচ টমাস টুখেল। স্ট্রাইকারদের বল পাঠানোর জন্য মিডফিল্ডে তেমন কেউ ছিল না, ৩-৪-২-১ ছকে দুই অকার্যকর উইংব্যাক টমাস মুনিয়ের ও লেভিন কুরজাওয়ার জন্য একজন মিডফিল্ডার কম খেলিয়েছেন টুখেল। ফলে স্ট্রাইকার হিসেবে খেলা কিলিয়ান এমবাপ্পে গোটা ম্যাচ মিডফিল্ড থেকে তেমন সহায়তা পাননি। নেইমার ও ডি মারিয়ার সঙ্গে এমবাপ্পের যোগাযোগ ছিন্ন করার জন্য তেমন খাটনি করতে হয়নি ডর্টমুন্ডকে। পরবর্তীতে এই সমস্যা বুঝতে পেরেও অতিরিক্ত একজন স্ট্রাইকার নামাননি টুখেল, ফলে এমবাপ্পেও তাঁর স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারেননি। যদিও বেঞ্চে মাউরো ইকার্দি ও এডিনসন কাভানির মতো দুজন তুখোড় স্ট্রাইকার ছিলেন। খেলোয়াড় বদল করেছেন মাত্র একজন, তাও ডি মারিয়ার জায়গায় তাঁর মতই আরেকজন রাইট উইঙ্গার (পাবলো সারাবিয়া) নামিয়েছিলেন টুখেল, ফলে ছকের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এই কারণেই ম্যাচ হেরে বসেছে পিএসজি।
১২ মার্চ এমন ভুল করলে কিন্তু চলবে না, টমাস টুখেল!

Post a Comment

0 Comments