সোসিয়েদাদের কাছে হেরে কোপা থেকে বিদায় রিয়ালের



বলের নিয়ন্ত্রণ ছিল তদেরই বেশি। মাঝ মাঠের দখলও। কিন্তু রক্ষণভাগটাই ছিল ছন্নছাড়া। আর তার খেসারৎ ষোলোআনা দিতে হলো স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদকে। রিয়াল সোসিয়েদাদের কাছে হেরে কোপা দেল রে থেকে বিদায় নিল দলটি। দারুণ এক জমজমাট ম্যাচ শেষে ৪-৩ গোলে রিয়ালকে হারিয়ে সেমি-ফাইনালে জায়গা করে নেয় সোসিয়েদাদ।
অথচ এদিন ম্যাচটা নিজেদের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে খেলেছিল রিয়াল। চলতি আসরে এটাই নিজেদের মাঠে প্রথম ম্যাচ ছিল তাদের। আর প্রথম ম্যাচেই ফিকে দলটি। ৬৫ শতাংশ বল পায়ে রেখে ২২টি শট নিয়েও হারতে হলো দলটিকে। মূলত রক্ষণভাগে দৃঢ়তার অভাবে হারতে হয় তাদের। তবে বেশ কিছু দারুণ আক্রমণও করেছিল দলটি। ফরোয়ার্ডের ব্যর্থতা ও প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক অ্যালেক্স রেমিরোর দারুণ কিছু সেভে হার মানতে বাধ্য হয় স্বাগতিকদের। 
এদিন ম্যাচের দশম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো রিয়াল। ব্রাহিম দিয়েজের পাস থেকে দুরূহ কোণ থেকে দারুণ এক শট নিয়েছিলেন করিম বেনজেমা। তবে তার চেয়েও দারুণ দক্ষতায় সে শট ফিরিয়ে দেন সোসিয়েদাদ গোলরক্ষক অ্যালেক্স। উল্টো ম্যাচের ২২তম মিনিটে পিছিয়ে পড়ে রিয়াল। অ্যালেক্সান্দার ইসাকের দূরপাল্লার শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন আলফোনসে আরেওলা। তবে ফিরতি বল অনেকটা ফাঁকায় পেয়ে যান মার্তিন ওদেগার্দ। কিন্তু এবার আর ফেরাতে পারেননি আরেওলা।
৩২তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর দারুণ সুযোগ মিস করে সোসিয়েদাদ। একেবারে ফাঁকায় বল পেয়েও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ইসাক। চার মিনিট পর ডি-বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট নিয়েছিলেন রিয়াল মিডফিল্ডার হামেস রদ্রিগেজ। তবে তার শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন সোসিয়েদাদ গোলরক্ষক। ৩৮তম মিনিটে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র একক নৈপুণ্যে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ছোট ডি-বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন। তবে বেনজেমাকে কাটব্যাক করতে গেলে পা দিয়ে তা আটকে দেন সোসিয়েদাদ গোলরক্ষক অ্যালেক্স। ফিরতি বলে ফেদেরিকো ভালভার্দের শটও রুখে দেন তিনি।
৪২তম মিনিটে মার্সেলোর ভলিও ধরে ফেলেন অ্যালেক্স। পাল্টা আক্রমণ থেকে গোল পেতে পারতো সোসিয়েদাদ কিন্তু একেবারে ফাঁকায় বল পেয়েও আকাশে উঠিয়ে দেন ইসাক। ৪৫অম মিনিটে তো অবিশ্বাস্য এক মিস করেন ইসাক। তার সামনে কেবল একাই ছিলেন রিয়াল গোলরক্ষক আরেওলা। কিন্তু লক্ষ্যেই শট নিতে পারেননি তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধের তৃতীয় মিনিটে আরও একটি গোল খেয়েছিল রিয়াল। তবে অফসাইডের কারণে সে যাত্রা বেঁচে যায় দলটি। তবে ব্যবধান বাড়াতে খুব বেশি সময় নেয়নি সোসিয়েদাদ। এর ক্রস থেকে দুর্দান্ত এক সাইড ভলিতে বল জালে জড়ান ৫৪তম মিনিটে এন্দার বেরানেতসার কাটব্যাক থেকে দুর্দান্ত এক ভলিতে লক্ষ্যভেদ করেন ইসাক। দুই মিনিট ফের আরও একটি গোল দেয় সোসিয়েদাদ। আবারো সেই ইসাক। এবার ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে জোরালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।
৫৯তম মিনিটে ব্যবধান কমায় রিয়াল। দিয়েজের বাড়ানো বল ধরে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দারুণ এক কোণাকোণি শটে লক্ষ্যভেদ করেন মার্সেলো। পাঁচ মিনিট পর ভিনিসিয়ুসের কোণাকোণি শট অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। তবে ৬৮তম মিনিটে আবারো গোল খায় রিয়াল। ইসাকের কাটব্যাক থেকে ফাঁকায় বল পেয়ে আলতো টোকায় বল জালে জড়ান মাইকেল মেরিনো।
৭৪তম মিনিটে রামোসের দূরপাল্লার শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক অ্যালেক্স। পাঁচ মিনিট পর ব্যবধান কমিয়েছিলেন ভিনিসিয়ুস। কিন্তু অফসাইডের কারণে ভিএআরে বাতিল হয় সে গোল। তবে এরপর ৩০ সেকেন্ড পরই ব্যবধান কমায় রিয়াল। সেই ভিনিসিয়ুসের দারুণ এক কাটব্যাক থেকে আলতো টোকায় বল জালে জড়ান বদলী খেলোয়াড় রদ্রিগো।
দ্বিতীয় গোল পেয়ে সোসিয়েদাদ শিবিরে চেপে ধরে স্বাগতিকরা। যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে একটি গোলও পায় দলটি। করিম বেনজেমার পাস থেকে দারুণ এক হেড লক্ষ্যভেদ করেন নাচো। এর দুই মিনিট পর দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন সোসিয়েদাদের গরোসাবেল। কিন্তু তা থেকে সুবিধা আদায় করতে পারেনি রিয়াল। এরপর আরও দুই মিনিট খেলা হলেও গোল আদায় করতে না পারলে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।

Post a Comment

0 Comments