আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন আর্জেন্টিনার এই তারকা


জীবনে বাবা-মা'র গুরুত্ব কত তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু আমাদের পথ দেখানোর জন্য তাঁদের কেউই সারা জীবন থাকেন না। বয়সের কাছে হার মেনে চলে যেতে হয় পরপারে। সন্তানদের জীবনের এক অংশ তখন হয়ে পড়ে স্থবির। যেমনটা হয়েছিল আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডার ইমানুয়েল মামানার

ইমানুয়েল মামানা। ফুটবল যারা নিয়মিত অনুসরণ করেন তাঁদের কাছে মোটামুটি পরিচিত নাম। আর্জেন্টিনার সমর্থক হলে তো কথাই নেই।

গত দুই-এক বছর ধরেই আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা যেসব নতুন তারকাদের নিয়ে আশায় বুক বাঁধছেন, মামানা তাঁদের একজন। সবার আশা, রবার্তো আয়ালা, এজেকুয়েল গ্যারায়,গ্যাব্রিয়েল হেইঞ্জদের পথ ধরে একদিন এই মামানাও দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হবেন। রিভার প্লেটে নিজের প্রতিভা দেখিয়ে এখন ২৪ বছর বয়সী এই তারকা খেলছেন রাশিয়ার ক্লাব জেনিত সেন্ট পিটার্সবার্গে। তবে মামানার কথা হয়তো কেউই জানত না, যদি কয়েক বছর আগে এই ডিফেন্ডার আত্মঘাতী সিদ্ধান্তটা নিয়ে নিতেন।

মামানার ক্যারিয়ার যখন মাত্র শুরু হচ্ছে, পিতৃহারা হন তিনি। বাবাকে হারানোর শোক থেকে বের হতে অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয়েছে তাঁকে। আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম 'ওলে'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এটাই জানিয়েছেন মামানা, 'বাবা যখন মারা যান, আমার মনে হয়েছিল সবকিছু ছেড়ে-ছুড়ে দিই। আগে থেকেই আমি মা কে হারিয়েছি। এরপর যখন বাবাও আমাকে ছেড়ে চলে গেলেন, ফুটবলটা অর্থহীন মনে হলো আমার কাছে। এমনকি নিজের প্রাণ নেওয়ার চিন্তা করেছিলাম দু-বার। অনেক কষ্ট হতো, অনেক কষ্ট। অনেক কঠিন ছিল সময়গুলো। ওই দুই তিন মাস জঘন্য কেটেছে আমার।'
দুঃসময় কাটাতে আর্জেন্টিনার বিখ্যাত ক্লাব রিভারপ্লেটের সমর্থন ও সাহায্য পেয়েছিলেন মামানা, 'পরে রিভার প্লেট আমাকে এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেয়। ওরাই আমাকে ভাবতে শেখায় যে আমার ক্যারিয়ারের জন্য আমার পরিবার যে পরিমাণ কষ্ট করেছে, যেসব ত্যাগ স্বীকার করেছে, আমি সেসব এই শোকের কারণে সেসব ত্যাগের অমর্যাদা করতে পারি না। আমাকে আমার বাবার স্বপ্ন পূরণ করতেই হতো। তিনি চেয়েছিলেন আমি যেন প্রথম বিভাগে খেলি। আমি আস্তে আস্তে নিজের খেয়াল রাখা শুরু করি। যদিও আমার আরও চারজন বড় ভাই আছে। এই ঘটনার পর আমি যেন হুট করে বড় হয়ে গেলাম। এখন বুঝি, ফুটবল খেলায় চোট আসতে পারে। সে চোট কষ্ট দেবে। কিন্তু কোনো কষ্টই বাবা-মা মারা যাওয়ার কষ্টের মতো নয়। আমাকে গড়ে তোলার জন্য রিভার প্লেটকে ধন্যবাদ।'
দুবছর রিভারপ্লেটে কাটানোর পর ২০১৬ সালে ফরাসি ক্লাব লিওঁতে যোগ দেন মামানা। এখন খেলছেন জেনিতে। এর আগে ব্রাজিলের তারকা স্ট্রাইকার আদ্রিয়ানো বাবার মৃত্যুশোক কাটিয়ে উঠতে না পারায় ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়েছিল তাঁর ক্যারিয়ার। মামানা অন্তত সে পথে যাননি!

Post a Comment

0 Comments